• বিভিন্ন ধরনের পণ্য বায়োলজিক বা বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট এর অন্তর্ভুক্ত যেমন ভ্যাক্সিন, রক্ত, রক্তের উপাদান, অ্যালার্জেনিক্‌স, সোমাটিক সেল, জীন থেরাপি, টিস্যু এবং রিকম্বিন্যান্ট থেরাপিউটিক প্রোটিন ইত্যাদি।

  • বায়োলজিকসমূহ গঠিত হতে পারে সুগার, প্রোটিন, নিউক্লিক এসিড থেকে বা এসব উপাদানের জটিল সংমিশ্রনের মাধ্যমে অথবা জৈব উপাদান যেমন কোষ এবং টিস্যু থেকে।

  • বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক উৎস যেমন- মানবদেহ, প্রানী, বা মাইক্রোঅরগানিজম থেকে বায়োলজিকসমূহকে পৃথক করা হয় এবং বায়োটেকনোলজি ও অন্যান্য কাটিং-এজ টেকনোলজির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়।

  • জিন বেইস্‌ড এবং সেলুলার এই দুই ধরনের বায়োলজিক প্রায়ই বায়োমেডিকেল রিসার্চের সামনের সারিতেই থাকে এবং বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয় যেখানে অন্য কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা বিদ্যমান নেই।

বেশীরভাগ ওষুধই রাসায়নিকভাবে সংশ্লেষিত এবং তাদের রাসায়নিক গঠন সহজেই জানা যায়। অন্যদিকে বেশীরভাগ বায়োলজিক্সই জটিল সংমিশ্রণে থাকে তাই এদের গঠন বা বৈশিষ্ট্য সহজেই শনাক্ত করা যায়না। বায়োটেকনোলজি ব্যবহার করে প্রস্তুত করা সকল বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট তাপ সংবেদনশীল হয় এবং খুব সহজেই মাইক্রোবিয়াল কন্টামিনেশন হতে পারে। তাই উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ থেকেই সম্পূর্ণ অ্যাসেপ্টিক প্রিন্সিপাল বা জীবাণুমুক্তকরণ নীতি ব্যবহার করা প্রয়োজন যা প্রচলিত ওষুধের উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে ভিন্ন।

  • যেসকল পণ্যের সরবরাহ এবং সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রার সীমা বজায় রাখা প্রয়োজন ঐসকল পণ্যের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং আলোক নিয়ন্ত্রিত সাপ্লাই চেইনকে কোল্ড চেইন বলা হয়। বিশেষ করে যে সাপ্লাই চেইন এর মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত ওষুধ সামগ্রী ব্যবস্থাপনা, পরিবহন এবং সংরক্ষণ করা হয় তাকে কোল্ড চেইন বলে।

  • ওয়ার্ল্ড হেল্‌থ অরগানাইজেশন (WHO) সুপারিশ করে যে প্রায় সবধরনের ভ্যাক্সিন (যা এক ধরনের বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট) ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে।

  • ভ্যাক্সিন এবং অন্যন্য বায়োলজিকসমূহ এমন একটি রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে হবে যেখানে সার্বক্ষনিক ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রা বজায় থাকে এবং রেফ্রিজারেটরটি একটি নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে যেখানে অনুমতি ব্যতীত জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকে।

  • যে সকল মেডিসিন এর গুণগত মান এবং কার্যকারিতা রক্ষা করার জন্য কোল্ড চেইন বজায় রাখতে হয় তাদেরকে কোল্ড চেইন মেডিসিন বলে।

  • কোল্ড চেইন বজায় রাখা রোগীর সুস্থতার জন্য খুবই জরুরী।

  • যদি কোল্ড চেইন বজায় রাখা না হয় তবে ওষুধের কার্যক্ষমতা কমে যাবে এবং তা অকার্যকর হবে। যেমন-Impacts of Temperature Deviation in Cold Chain Medicine

  • যদি ওষুধের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী সেঃ এর নিচে নেমে যায় তবে তা জমাট বাঁধতে পারে যার ফলে ওষুধের কার্যকারিতা বিপরীতভাবে প্রভাবিত হতে পারে। উপরন্তু জমাট বাঁধা ওষুধের ভায়াল বা সিরিঞ্জ ফেটে যেতে পারে।

  • যদি ওষুধের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী সেঃ এর উপরে চলে যায় সেক্ষেত্রেও ওষুধের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।

  • কোল্ড চেইন বজায় না রাখলে ঘটনাচক্রে রোগের চিকিৎসা অকার্যকর হতে পারে যার ফলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

  • রোগীর চিকিৎসা চলাকালীন কোন ডোজের সার্বক্ষনিক কোল্ড চেইন বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে এতে সম্পুর্ন চিকিৎসাই অকার্যকর হতে পারে। এর ফলে- পুনরায় চিকিৎসা শুরু করলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। রোগী বা তার পরিবারের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

যেসকল কেমিস্ট, ফার্মেসি বা হোম ডেলিভারি সার্ভিস প্রদানকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরাসরি অথেনটিক সোর্স থেকে ওষুধ ক্রয় করে শুধুমাত্র তাদের কাছ থেকেই সবসময় কোল্ড চেইন মেডিসিন কিনুন।

  • কোল্ড চেইন মেডিসিন রেফ্রিজারেটরে রাখা আছে কিনা তা কেনার পূর্বে ভালভাবে খোঁজ নিন।

  • লোডশেডিং এর সময় কিভাবে কোল্ড চেইন বজায় রাখা হয় সে ব্যাপারে কেমিস্ট, ফার্মেসি বা হোম ডেলিভারি সার্ভিস প্রদানকারী ব্যাক্তির কাছে খোঁজ নিন বিশেষ করে যখন তাদের কেমিস্ট শপ, ফার্মেসি বা সেল্‌স ডিপো বন্ধ থাকে।

  • যাদের ২৪ ঘন্টা পাওয়ার ব্যাকআপ সুবিধা আছে তাদের কাছ থেকেই কোল্ড চেইন মেডিসিন কিনুন।

  • যে রেফ্রিজারেটরে কোল্ড চেইন মেডিসিন সংরক্ষণ করা হয় তার তাপমাত্রা কিভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় সে ব্যাপারে কেমিস্ট, ফার্মেসি বা হোম ডেলিভারি সার্ভিস প্রদানকারী ব্যাক্তির কাছে খোঁজ নিন।

  • যাদের কাছে রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করার পদ্ধতি বিদ্যমান রয়েছে তাদের কাছ থেকেই কোল্ড চেইন মেডিসিন কিনুন।

  • যথাযথ প্যাকেজিং যেমন- থার্মোপোর বক্সের ভিতর আইস প্যাক না থাকলে কোল্ড চেইন মেডিসিন গ্রহন করবেন না।

  • পলিথিন ব্যাগে কোল্ড চেইন মেডিসিন গ্রহন করবেন না।

  • পলিথিন ব্যাগ আপনার মেডিসিনকে সূর্যালোকের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করতে পারেনা ।

  • প্যাকেজিং এর ভিতর কতক্ষন কোল্ড চেইন মেডিসিনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় থাকবে তা সর্বদা কেমিস্ট, ফার্মেসি বা হোম ডেলিভারি সার্ভিস প্রদানকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জেনে নিন। এবং ঐ সময়ের মধ্যে মেডিসিনের ব্যবহার বা সংরক্ষণ নিশ্চিত করুন।

সর্বদা মেডিসিনের চালান বা বিল সংগ্রহ করুন এবং মেডিসিনটির ব্যবহার উপযোগী মেয়াদ আছে কিনা তা মেয়াদ উত্তীর্নের তারিখ দেখে নিশ্চিত হোন। কোনভাবেই ভাঙ্গা, ছেড়া বা আগে থেকেই খোলা মেডিসিন গ্রহন করবেন না।

  • যদি আপনি বাসায় কোল্ড চেইন মেডিসিন সংরক্ষণ করতে চান তাহলে মনে রাখবেন কোল্ড চেইন মেডিসিন অবশ্যই রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করতে হবে।

  • রেফ্রিজারেটর বলতে আপনার বাসার ফ্রিজের ওই অংশকে বোঝানো হচ্ছে যেখানে আমরা সাধারণত কাঁচা শাকসবজি বা ফলমূল সংরক্ষণ করি এবং এর তাপমাত্রা ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেঃ এর মধ্যে থাকে।

  • কোল্ড চেইন মেডিসিন কখনই ফ্রিজারে সংরক্ষণ করবেন না।

  • ফ্রিজার হল আপনার বাসার ফ্রিজের ওই অংশ যেখানে আমরা সাধারণত কাঁচা মাছ বা মাংশ সংরক্ষণ করে থাকি এবং এর তাপমাত্রা ০ (শূন্য) ডিগ্রী সেঃ এর অনেক নিচে থাকে। তাই এই অংশে রাখা খাদ্যবস্তু জমাট বেঁধে যায়।

  • ফ্রিজারে কোল্ড চেইন মেডিসিন সংরক্ষণ করলে তা জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

  • কোল্ড চেইন মেডিসিন রেফ্রিজারেটরের দরজায় রাখবেন না। কারণ রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা বা বন্ধ করার সময় মেডিসিন তাৎক্ষনিকভাবে কক্ষ তাপমাত্রার সংস্পর্শে চলে আসে।

  • কোল্ড চেইন মেডিসিন রেফ্রিজারেটরের ভিতরের দেয়ালের সাথে রাখবেন না। কারণ এর ফলে মেডিসিনে তুষারকণা জমতে পারে।

  • যদি বিদ্যুৎ না থাকে তবে সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টা পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে কোল্ড চেইন মেডিসিন সংরক্ষণ করা যাবে। সেক্ষেত্রে রেফ্রিজারেটরের দরজা সর্বদা বন্ধ রাখতে হবে।

Reference

  1. [Internet; cited 2019, July 14]. Retrieved from

  2. [Internet; cited 2019, July 14]. Retrieved from https://www.who.int/immunization/documents/IIP2015_Module2.pdf

  3. [Internet; cited 2019, July 14]. Retrieved from

এই ওয়েবসাইট এর তথ্য বাংলাদেশের রোগীদের প্রয়োজন বিবেচনা করে প্রদান করা হয়েছে এবং এতে এমন পণ্যের বিবরণ বা তথ্য থাকতে পারে যা আপনার দেশের জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। আপনি যদি এমন কোন দেশ থেকে এই তথ্যগুলো দেখে থাকেন, যা আপনার দেশের স্থানীয় আইন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, নিবন্ধন বা ব্যবহার প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সেক্ষেত্রে রোশ বাংলাদেশ দায়বদ্ধ নয়। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে, এই সাইট/পেইজের তথ্য মেডিকেল পরামর্শ হিসাবে বিবেচিত নয় এবং কোন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করার বিকল্প হিসাবেও ব্যবহার করা যাবেনা । আমরা কোন ব্যাক্তির চিকিৎসা পরিচালনা বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগ। এ ব্যাপারে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। আমরা এই ওয়েবসাইট/পেইজের মাধ্যমে পণ্য সম্পর্কিত প্রশ্নেরও উত্তর দিতে অপারগ। এই সাইটটি পণ্যের প্রচার/বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেও তৈরি নয়। রোশ বাংলাদেশের লিখিত সম্মতি ছাড়া এই সাইটের তথ্য বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা বৈধ নয়।